A Conversation with an Old Bengali Poet

  A Conversation with an old Bengali Poet.
  ::Combination of fact & fiction::



 





    তখন রাত দুটো বেজে সতেরো মিনিট। ঘুমোতে যাবো ঠিক করেছি, এমন সময় দরজার ওপারে এলোমেলো চলতে থাকা ক্লান্ত পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম। কিছুক্ষণ আড়ি পেতে বুঝলাম, এ আমার মনের ভুল নয়। মনে হলো, কেউ হয়তো কিছু খুঁজছে। কৌতুহল মেশানো ভয় সঙ্গে নিয়ে বের হলাম শব্দের উৎস অনুসন্ধানে। না! বাইরে কেউ নেই হাড় হিম করা শীত ছাড়া । চেষ্টা বিফলেই গেল, অগত্যা ফিরে আসতে বাধ্য হলাম । দরজা বন্ধ করতেই শুরু হলো, সেই চেনা শব্দেগুলির নৃত্য। আর থেমে থাকা যায় না, ভীতসন্ত্রস্ত হয়েও প্রশ্ন ছুঁড়ে পিছিয়ে গেলাম। শব্দের নৃত্য বন্ধ হলো, কিন্তু কোন উত্তর এলো না। সব নিশ্ছুপ, মনে হলো পৃথিবীকে কিছুক্ষণের জন্য গ্রাস করেছে এক অজানা নিস্তব্ধতা। অবশেষে ভাঙ্গলো নিস্তব্ধতা, শুরু হলো কথোপকথন-
কে.... ? কেউ কি আছেন দরজার ওপারে ?
"আমি! কবি! বুড়ো কবি।"
বুড়ো কবি! তা আপনি কোন শতকের মশাই?
" যে শতকে বাঙালির নবজাগরণ ঘটিয়াছিল। উনিশ শতক।"
উনিশ শতকের বুড়ো কবি এই একবিংশ শতাব্দীর শীতমধ্য রাতে কী চান? কুইল না কালির দোয়াত !
"হারিয়ে যাওয়া উনিশ শতক, নাট্য আন্দোলণ, আমার অপ্রকাশিত কবিতাগুচ্ছ ফিরিয়া লইতে চাই। পারিবে দিতে?"
বেশ সমস্যায় ফেললেন তো মশাই। আপনার উনিশ শতক আপনাকে ফেরাই কি করে বলুন তো? নাট্য আন্দোলন! ভুলে যান, মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন নাটক দেখে, তাও পাস পেলে মানে ফ্রিতে । কবিতার ক্ষেত্রেও তাই, পাঠকের সংখ্যা কমছে। তবে কবির সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, কিছুদিন পর পাঠক থাকবে না, কেবল কবিরা কবিদের কবিতা পড়বেন। মাফ করবেন, আপনার কিছুই ফিরিয়ে দিতে পারবো না।
" কেউ পারে নাই....। বেশ, তাহলে আমার অন্বেষণ চলুক, এই খামখেয়ালি ভরা পৃথিবীর যাত্রা পথে। বুঝিতে পারিতেছি এই শতাব্দীর জাতীয় জীবনে সাহিত্যের প্রভাব সর্বাধিক অনুভূত হয় নাই। প্যারীচাঁদ, দেবেন্দ্রনাথ, অক্ষয়কুমার,বঙ্কিমচন্দ্র, কালীপ্রসন্ন, তাঁরাচাঁদ, চন্দ্রশেখর, কৃষ্ণমোহন.... সকলের হইতে এই সংবাদ গোপন রাখিতে হইবে, না হইলে সকলেই ব্যথিত হইবেন।"
(কিছুক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে রইলেন)
যদি আপনার নাম ও অপ্রকাশিত কবিতাগুলির দু-একটা নাম বলেন, তাহলে অনুসন্ধান করে দেখতে পারি। আচ্ছা!আপনি কি এখনও কবিতা লেখেন? কি নিয়ে লেখেন?
" লিখিতো। বুড়ো কবি আজও লেখে বুড়ী চাঁদের কবিতা.........." ( সঙ্গে বেদনাযুক্ত গম্ভীর হাসি)
হাসিটা ক্রমশ যেন শীতের উত্তুরে হাওয়ার সাথে মিলিয়ে যেতে লাগালো। বুঝলাম, শেষ প্রশ্নটি করা নেহাতই বোকামি ছিল। অনেক ডাকাডাকি করে বাইরে বের হলাম, পেলাম না। বুঝতে দেরি হলো না, বুড়ো কবি তাঁর অন্বেষণে পাড়ি দিয়েছেন। রুমে ফিরে এসে দেখলাম, মেঝের ওপর পড়ে আছে বই মেলা থেকে আমারই কিনে আনা নামবিহীন কোন এক কবির কিছু কবিতার পুরানো ম্যানিউস্ক্রিপট্। তারপর বুড়ী চাঁদের সঙ্গে জিজ্ঞাসার অন্ধকার স্বাদ নিয়ে অনেক রাত অবধি জেগে ছিলাম, তবে বুড়ো কবি আর আসেননি। জানি না আর কোনোদিন আসবেন কিনা!
                                                            

Post a Comment

3 Comments

Anonymous said…
Really interesting.
Unknown said…
Really interesting.
Anonymous said…
nice